
বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো ঐতিহ্যবাহী ও লোকজ খেলাধুলার আন্তর্জাতিক প্রসার ও উন্নয়ন।
এই ঐতিহাসিক চুক্তি ৪ জুলাই ২০২৫, তুরস্কের ইস্তানবুলে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন মাননীয় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ইউনিয়নের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট নেজমুদ্দিন বিলাল এরদোয়ান।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উভয় পক্ষ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সংস্কৃতি এবং তুরস্কের সমৃদ্ধ ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেন। বিলাল এরদোয়ান কাবাডি, কুস্তি, বলিখেলা ও নৌকা বাইচের মতো খেলাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা নিয়ে কাজ করা ফেডারেশনগুলোকে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে যুক্ত করার বিষয়টি তারা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছেন।
বিলাল এরদোয়ান বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য তুরস্কে স্কলারশিপ, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরির আগ্রহ জানান। তিনি বাংলাদেশের জন্য তাদের পরিচালিত স্কুলের একটি শাখা খোলার পরিকল্পনার কথাও জানান।
ব্যক্তিগতভাবে তিনি কক্সবাজার সফরের স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা চালুর মাধ্যমে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের গণআন্দোলনের সময় ছাত্র ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের প্রশংসা করে বিলাল এরদোয়ান বলেন, “বাংলাদেশ ও তুরস্ক—উভয় দেশের জনগণই নিজেদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় রক্ষায় সচেতন।”
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে তার প্রকৃত বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে এবং তুরস্ক এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তিনি উল্লেখ করেন, তুরস্ক বারবার সংকটকালে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা দুই দেশের বন্ধুত্বের গভীরতা তুলে ধরে।
উপদেষ্টা গাজায় চলমান মানবিক সংকটে তুরস্কের অবস্থানকে প্রশংসা করে বলেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মুসলিম উম্মাহর পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “একটি কার্যকর মুসলিম আন্তর্জাতিক জোট গঠনে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে চায়।”
উপদেষ্টা আসন্ন গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫-এ অংশগ্রহণের জন্য বিলাল এরদোয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই সফর বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে যুব, ক্রীড়া এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করবে।