বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। তিনি বলেন, কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়, আর সেই কারণেই বিএনপি সরকারের ওপর কোনো রকম চাপ প্রয়োগের পরিবর্তে ভিন্নমতের জায়গাগুলোতে নোট অব ডিসেন্ট দেয়, যা বিএনপি ডিসেন্ট ওয়ে হিসেবে দেখে।
শনিবার বিকেলে ‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আয়োজনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
তারেক রহমান সতর্ক করে বলেন, দেশ অস্থিতিশীল হলে পরাজিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ উন্মুক্ত হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদের রোষানল থেকে রক্ষা পেতে ফ্যাসিবাদবিরোধীদের কেউ কেউ ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করেছিলেন। একইভাবে পতিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তিও এখন ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে কি না—সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের রাজপথের সঙ্গী কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড দেশে বহু মানুষের অধিকার ও সুযোগ বিনষ্টের একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে। এই অবস্থায় গুপ্ত বাহিনীর অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম উপায় হলো ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা। এজন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগীদের সঙ্গে সমঝোতা ও সহযোগিতার মনোভাব অটুট রেখেছে।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি সব সময় একটি শান্তিকামী, সহনশীল ও গণমুখী রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করে আসছে। ভিন্ন দল ও মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতিরই অংশ। তিনি বলেন, দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করাই বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্যের বন্ধন আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সৌন্দর্য প্রকাশ করে।
সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই দেশে আপনার যতটুকু অধিকার, আমারও ঠিক ততটুকু অধিকার—কারও বেশি বা কম নয়।
অনুষ্ঠানে মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ সেনের সভাপতিত্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।
