
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী নতুন বাস্তবতার আমরা এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে প্রশাসনিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, নৈতিকভাবে সাহসী ও সংবিধানিকভাবে শক্তিশালী বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে হবে।
শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আইন কেবল নিয়মের সমষ্টি নয়, বরং এটি জাতির নৈতিক বিবেকের প্রতিফলন। ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র দৃঢ় হয়, আর ন্যায় ব্যর্থ হলে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে। রাষ্ট্র যখন নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থ হয় এবং কণ্ঠরোধ করে, তখন ন্যায়ের জন্য লড়াই করা নৈতিকভাবে অপরিহার্য হয়ে উঠে।
তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ, বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা এবং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ন্যায়বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও নবীন আইনস্নাতকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আইনের অধ্যয়ন কেবল পেশাগত প্রশিক্ষণ নয়, এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সাধনা। মনে রাখতে হবে, প্রত্যেক আইনের পেছনে আছে একটি জীবন, প্রত্যেক রায়ের পেছনে আছে একটি ভাগ্য। ন্যায়ের প্রকৃত মান নিরপেক্ষতা ও মানবিক বিচারের মধ্যেই নিহিত।
এছাড়াও দেশের আইনাঙ্গন সমৃদ্ধিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং ভবিষ্যতেও এমন আইনজ্ঞ তৈরি হবে, যারা কেবল জ্ঞানে নয়, মানবিকতাতেও আলোকিত হবে বলে মনে করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি ড. সায়েদা আঞ্জুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন, সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি এস.এম. এমদাদুল হক ও বিচারপতি এ.কে.এম. আসাদুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিচারপতি মহোদয়গণসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, সুপ্রীম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তাবৃন্দ, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও নবীন আইনস্নাতকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।