• ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রশংসায় ভাসছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত আগস্ট ১৩, ২০২৫, ১৬:১৭ অপরাহ্ণ
প্রশংসায় ভাসছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান
সংবাদটি শেয়ার করুন....

কারিগর পাড়া ও রেজামনি পাড়া—খাগড়াছড়ির দুর্গম অঞ্চলের দুটি গ্রাম। পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস এই গ্রামগুলোতে। নেই রাস্তা, বিদ্যুৎ বা বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির ব্যবস্থা।

উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এতদিন। প্রায় তিন মাস আগে রেজামনি পাড়া আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সমস্যার কথা শোনেন।

গ্রামবাসী জানান, রাস্তা, বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে তারা ভোগান্তিতে আছেন। পানিবাহিত রোগও বাড়ছে। সেনাপ্রধান তাৎক্ষণিকভাবে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। কয়েক দিনের মধ্যেই সোলার প্যানেলের মাধ্যমে পানির সরবরাহ প্রকল্প শুরু হয়।

প্রকল্পটি ১ জুলাই শুরু হয়ে ১ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গ্রামবাসীর মতে, এই প্রকল্প তাদের জীবনমান বদলে দেবে। কারিগর পাড়ার ৭০ বছর বয়সি কৃষক সুবীন্দ্র লাল কারবারি বলেন, ‘এখানকার কুয়া ও টিউবওয়েলের পানিতে প্রচুর আয়রন থাকে। সেনাপ্রধানের এই উদ্যোগ আমাদের জন্য ওপরওয়ালার আশীর্বাদ।’

প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাজলক্ষ্মী অ্যান্ড রাজ পিউ ইঞ্জিনিয়ারিং সল্যুশন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব বড়ুয়া জানান, সোলার সিস্টেমে প্রতিদিন চার হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাবে। প্রকল্পে স্থাপন করা হচ্ছে দুইটি ১ হাজার লিটারের ট্যাংকি এবং একটি ২ হাজার লিটারের ট্যাংকি।

দুর্গম পাহাড়ের উন্নয়নে সেনাবাহিনী
সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনী পার্বত্য সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করে যোগাযোগব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে। আগে যেখানে পৌঁছাতে দুই-তিন দিন হাঁটতে হতো, এখন সেখানে কয়েক ঘণ্টায় যাওয়া সম্ভব। সেনাবাহিনী দুর্গম এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, কৃষিজাত পণ্যের বিপণন সহায়তা এবং বাজারে টহল দিয়ে আসছে। পর্যটনশিল্পের বিকাশেও তাদের অবদান রয়েছে।

সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল ক্যাম্পে ভিড়
১ নম্বর খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল ক্যাম্পে রোগীর ভিড় ছিল উপচে পড়া। এখানে ফ্রি চিকিৎসা ও উন্নতমানের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। গোগড়াছড়ির টিমরশ মারম জানান, তার ছয় বছরের সন্তানের হাতের ইনফেকশন এখানকার ওষুধে অনেকটাই সেরে গেছে।

মেডিক্যাল ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট মুনিম ইসলাম সামিন জানান, চারজন ডাক্তার কাজ করছেন, নারীদের জন্য গাইনি বিশেষজ্ঞও রয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, জরুরি রোগীদের সেনাবাহিনী হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামে পাঠায়। গত এক বছরে ১৯ হাজার ৯১২ জনকে চিকিৎসা দিয়েছে সেনাবাহিনী, যার মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ১২ হাজার ৫৫৪ জন এবং বাঙালি ৭ হাজার ৩৫৮ জন।