• ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোলা বিটিসিএল অফিসে জনবল সংকট , গ্রাহক সেবা ব্যাহত

ভোলা জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত অক্টোবর ৮, ২০২৫, ১৬:১৯ অপরাহ্ণ
ভোলা বিটিসিএল অফিসে জনবল সংকট , গ্রাহক সেবা ব্যাহত
সংবাদটি শেয়ার করুন....

তীব্র জনবল সংকটে ধুঁকছে ভোলা বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড) অফিস। এতে করে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে গ্রাহক সেবা। ৩৪ টি পদের অনুকূলে মাত্র ১২ জন দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হয় সংশ্লিষ্টদের । ফলে রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা ক্রমশই কমে আসছে। গত দুই দশকে জেলায় ৫’শ এর বেশি সংযোগ কমে গিয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

একসময় মানুষের দূর দূরান্তে যোগাযোগ রক্ষায় কথা বলার জন্য টেলিফোনই ছিল প্রধান ভরসা। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণে ও মুঠোফোনের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় এর ব্যবহার কমছে। ২০২৩ সালে বিটিসিএলের আকর্ষণীয় প্যাকেজে ইন্টারনেট সহ টেলিফোন সংযোগ জিপন সেবা চালু হলে গ্রাহক সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পায় । কিন্তু বিটিসিএলএর পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা যাচ্ছনা। প্রতিষ্ঠানটির জেলা কার্যালয়ে মোট ২২ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ছয় জন। এছাড়া মনপুরা ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় সবকটি পদই শূন্য রয়েছে। অন্যান্য উপজেলায়ও রয়েছে জনবল সংকট।

বিটিসিএলএর গ্রাহক মশিউর রহমান পিংকু বলেন,
আমার বাসায় বিটিসিএল এর ওয়াইফাই এবং টেলিফোন দুটোই রয়েছে। ভোলায় ঝড় বৃষ্টিসহ বিভিন্ন কারণে বিটিসিএল সংযোগে প্রায় বিঘ্ন দেখা দেয়। লাইন মেরামত বা স্বভাবিক করতে কর্তৃপক্ষকে জানালেও যথাসময় প্রতিকার পাওয়া যায়না।

অপর গ্রাহক আমিনুল ইসলাম জানান, কোন কোন ক্ষেত্রে বিরিসিএল’র গ্রাহকদের ভোগান্তি লেগেই থাকে। তাই কেউ কেউ টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।

বিটিসিএল কার্যালয়ের কনিষ্ঠ ডাটা এন্ট্রি সহকারি মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, লোকবল সংকট থাকার কারণে তাকে একাধিক কাজ করতে হয়। এতে করে নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট গ্রাহককে সেবা দেয়া যায়না। বিশেষ করে একজন লাইনম্যান দিয়ে একাধিক স্থানে কাজ করতে বেগ পেতে হয়। এছাড়াও নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদের।

বিটিসিএল’র কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক (ট্রান্সমিশন) আশীষ কুমার সাহা জানান, জনবল সংকট ও পরিবহন সংকট বিটিসিএল এর মূল সমস্যা। এর ফলে অনেক সময় জনগণের প্রত্যাশিত সার্ভিস দিতে আমরা পারছি না। তাই পর্যাপ্ত জনবল ও পরিবহন সুবিধা পেলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রাহককে কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।

প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ পারভেজ জানান, বিটিসিএল’র জেলা অফিসে ছয় জন লাইনম্যান থাকার কথা। সেখানে রয়েছে মাত্র একজন। আর মনপুরা ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় তাদের একজন লোকও নেই। অন্য উপজেলা থেকে লোক দিয়ে সেখানকার কার্যক্রম চালাতে হয়। ভোলা জেলায় গত ২ দশক আগে টেলিফোন সংযোগ ছিল ১৫’শ ৫০ টি। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩২টি।

তিনি আরো জানান, ২০২৩ সালে ভোলা সাদরে প্রথমবারের মতো হাই স্পিড ক্ষমতা সম্পন্ন জিপন সংযোগ চালু হয়। ব্যাপক গ্রাহক চাহিদা থাকলেও ৩ হাজার ৭২টি ক্যাপাসিটির বিপরীতে সংযোগ হয়েছে মাত্র ৯’শটি। সমগ্র জেলায় একটিমাত্র সংযোগ দেয়ার স্ল্পাইসিং মেশিন। উপজেলা পর্যায়ে কোন লাইন মেরামত বা সংযোগ দিতে এই মেশিন নিয়ে গেলে জেলার কাজ বন্ধ থাকে।

একদিকে মুঠোফোন ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক সম্প্রসারণের ফলে এমনিতেই ল্যান্ডফোনের ব্যবহার কমে আসছে, অন্যদিকে যেটুকো টিকে আছে তা পর্যাপ্ত লোকবল না থকায় প্রত্যাশিত সেবা দেয়া যাচ্ছেনা। তাই প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রিয় এই প্রতিষ্ঠানটিকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।