• ৩০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মতিঝিল-কমলাপুর অংশে ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কাজে ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ১৭:২৮ অপরাহ্ণ
মতিঝিল-কমলাপুর অংশে ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কাজে ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয়
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে রাজধানীর মেট্রোরেলের মতিঝিল-কমলাপুর অংশে ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কাজে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। বুধবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেট্রোরেলের মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল সিস্টেমের কাজের জন্য ২০১৮ সালের জুন মাসে দরপত্র দাখিলকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ব্যয় নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠলেও অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সফল দর-কষাকষির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অর্থ সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়েছে।

সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (আরডিপিপি) দ্বিতীয় সংশোধনী অনুযায়ী এই খাতে ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল, যা অনুমোদিত ব্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রকৃত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় দরপত্র মূল্যায়নের মাধ্যমে, যা মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার বিনিময় হার, কাঁচামালের সরবরাহ এবং পরিবহন খরচের মতো উপাদানের ওপর নির্ভর করে।

জুলাই ২০২৩ সালে মারুবেনি-এল অ্যান্ড টি-এর প্রস্তাবিত মূল্য ছিল প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এতো বেশি দরে কাজ করাতে অনীহা প্রকাশ করে। সরকারের নির্দেশে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ দর-কষাকষি কৌশল গ্রহণ করে এবং দীর্ঘ আলোচনার পর ৪৬৫ কোটি টাকায় কাজটি সম্পাদনে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। একইসঙ্গে, ১ বছর ডিএপি (ডিফ্যাক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ড) বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।

উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কাজও মারুবেনি-এল অ্যান্ড টি সম্পন্ন করেছিল। ফলে একই ঠিকাদার থাকায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সিস্টেম ইন্টিগ্রেশনে সুবিধা হবে।

এই চুক্তির মাধ্যমে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা নিট সাশ্রয় হয়েছে, যা সরকারের ‘ব্যয় অপ্টিমাইজেশন’ নীতির প্রতিফলন। প্রকল্পে অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকার চুক্তি অনুযায়ী, তাদের মনোনীত ঠিকাদারের মাধ্যমেই কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বচ্ছতা ও কার্যকর দর-কষাকষির মাধ্যমে জনগণের অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত কাজিপাড়া ও মিরপুর-১০সহ অন্যান্য মেট্রোরেল স্টেশন মাত্র ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়াই মাসে মেরামত সম্পন্ন করা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে ৩৫০ কোটি টাকায় এক বছরেরও বেশি সময় লাগত বলে নির্ধারিত ছিল।

সম্প্রতি পিক আওয়ারে ট্রেনের অপেক্ষার সময় ৮ মিনিট থেকে কমিয়ে ৬ মিনিট করা হয়েছে, যা ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ মিনিটে নামানো হবে। এছাড়া মেট্রোরেলের সেবা সময়ও ১ ঘণ্টা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

ভাড়া-বহির্ভূত আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্টেশন ও ট্রেনের অভ্যন্তরে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, এটিএম ও সিআরএম বুথ স্থাপন এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপন কার্যক্রমের চুক্তিগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যানেল স্থাপনের চুক্তিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পে ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য দর বিশ্লেষণ, নকশা সংশোধন ও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে দর তুলনা করে সর্বনিম্ন ব্যয়ের প্রাক্কলন নির্ধারণের কাজ চলছে।

এছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা, রিয়েল-টাইম প্রযুক্তি স্থানান্তর, স্থানীয় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও শিল্প বিকাশে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।