★ অভিযোগ থাকার পরও পুলিশের রহস্যজনক গড়িমসি
★ থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও আবারও হামলা
★ একজন হামলাকারী আটকের পরও পুলিশ কেন ছেড়ে দিল, প্রশ্ন জনমনে
রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে ‘আজকের পত্রিকা’র সাংবাদিক নুরুল আমিন হাসান সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, উত্তরখান মাজারসংলগ্ন কসাই পারভেজের দোকান ‘পারভেজ গোশত বিতানে’ কর্মরত ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৪ জুলাই) ভোররাতে। হামলার সময় প্রাণ বাঁচাতে হাসান আশপাশের একটি খাবারের দোকানে আশ্রয় নিলেও হামলাকারীরা সেখানেও তাকে ঘিরে ফেলে।
হাসানকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানার পুলিশ এবং র্যাব-১ এর একটি টহল দল। অভিযুক্ত কসাই পারভেজের ছোট ভাই জাহিদকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হলেও পরে তাকে রহস্যজনক কারণে মুক্তি দেওয়া হয়।
আহত সাংবাদিক হাসান জানান, কসাই পারভেজের কাছে তার তিন লাখ টাকা পাওনা ছিল, যা তিনি ২০২২ সালের কুরবানির ঈদের আগে ধার দিয়েছিলেন। সেই টাকার দাবিতেই তিনি রাতে দোকান খোলার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে পারভেজের ছোট ভাই জাহিদ, রকি, জানু ও আরও কয়েকজন মিলে তাকে ঘিরে ফেলে এবং মারধর শুরু করে।
হাসান বলেন, “তারা আমাকে চিপায় নিয়ে হামলা করে, আমার গলার চেইন, মানিব্যাগ, টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ কার্ড ছিনিয়ে নেয়।” পরে তিনি পাশের একটি দোকানে ঢুকে প্রাণ রক্ষা করেন, কিন্তু সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়েও ঘেরাও করে রাখে।
হাসান জানান, শুরুতে পারভেজ তাকে ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে যুক্ত করার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করে। এক পর্যায়ে হিসাব-নিকাশ এড়িয়ে চলতে শুরু করে এবং একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও টাকা ফেরত দেয়নি। ৯ এপ্রিল পারভেজ ও জাহিদ তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়, যার ভিত্তিতে হাসান উত্তরখান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ প্রথমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও পরে নির্ধারিত তারিখে টাকা না দেওয়ায় মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এ অবস্থায় হঠাৎ ৪ জুলাই রাতের হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা উত্তরখান থানার এসআই টি এম আল আমিন সাংবাদিকদের জানান, “সিনিয়র স্যারের নির্দেশে জাহিদকে থানায় নেওয়া যায়নি। মামলার আগে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষ করে এলে তখন আসামিকে ধরা হবে”।
এই বক্তব্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও রহস্যের জন্ম দিয়েছে।
আহত সাংবাদিক নুরুল আমিন হাসান উত্তরখান থানায় হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং তিনি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।