সাভার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি পদে ইমু ইমরান নামে একজন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনায় কলেজজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইমরান ধামরাই সরকারি কলেজ থেকে উন্মুক্তভাবে এইচএসসি সম্পন্ন করে গত ১১ মার্চ ২০২৫ তারিখে সাভার সরকারি কলেজে ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হন। অথচ এর কিছুদিন পরেই তিনি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান, যা অনেকের কাছেই অনৈতিক এবং পক্ষপাতমূলক বলে মনে হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, ইমরান ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাফুজ ইকবালের ছোট ভাই হওয়ায় তাকে এ পদ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের নিয়ম অনুযায়ী কোনো সম্মেলন বা মনোনয়ন প্রক্রিয়া ছাড়াই, কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে, একরকম ‘পকেট কমিটি’ গঠনের মাধ্যমে সভাপতি পদে বসানো হয়েছে। এমনকি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইমরান হাসান এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিচওয়াল দেওয়ানের বিরুদ্ধেও অর্থের বিনিময়ে পদ কেনার অভিযোগ রয়েছে।
সাভার সরকারি কলেজে প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে, কিন্তু কলেজে একজন রেগুলার শিক্ষার্থীও সভাপতি হওয়ার মতো উপযুক্ত বিবেচিত হননি—এমনটি অনেকের বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও ইমরান সভাপতি হয়েছেন, অথচ দীর্ঘদিন ছাত্রদলে সক্রিয় রেগুলার ছাত্রদের কেউই মূল্যায়িত হননি। এর ফলে ছাত্রদলের অভ্যন্তরে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে।
এছাড়া, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়সালকেও অভিযোগের তীরে বিদ্ধ করা হচ্ছে। জানা গেছে, তিনিও মাত্র একদিন আগে কলেজে ভর্তি হয়ে কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। এমনকি জমি দখলের অভিযোগে তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তাকে মদ্যপ অবস্থায় অশালীন আচরণ করতেও দেখা গেছে।
কমিটিতে এমন ছয়জন রয়েছেন, যারা বাস্তবে কলেজে ভর্তি না হয়েও পদ পেয়েছেন। এসব অনিয়মের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রদলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক সময়ের গৌরবময় সংগঠন এখন ‘স্বজনপ্রীতি’ ও ‘অর্থনৈতিক লেনদেনের’ মাধ্যমে নেতৃত্ব বণ্টনের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ।
ছাত্ররাজনীতিতে যোগ্যতা ও ত্যাগের পরিবর্তে যদি আত্মীয়তা আর অর্থই মুখ্য হয়, তবে সেই সংগঠনের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা আর কিভাবে থাকবে?