• ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতালিতে এমপিকে হত্যার হুমকি, বাংলাদেশি প্রবাসীকে বহিষ্কার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৯:৪২ পূর্বাহ্ণ
ইতালিতে এমপিকে হত্যার হুমকি, বাংলাদেশি প্রবাসীকে বহিষ্কার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য এবং ইতালির মনফালকোন শহরের সাবেক মেয়র আন্না মারিয়া চিসিন্টকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক বাংলাদেশি প্রবাসীকে ইতালি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গরিজিয়া পুলিশের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বহিষ্কৃত ব্যক্তির নাম আইয়ুব খান (৩৮), কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বাসিন্দা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ফ্রিউলি ভেনেজিয়া জুলিয়া অঞ্চলের সীমান্তবর্তী শহর মনফালকোনের কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি এমইপি আন্না মারিয়া চিসিন্টকে ‘গলা কেটে হত্যার হুমকি’ দেন। স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানালে তাকে আটক করা হয়।

এরপর আদালতের নির্দেশে বুধবার (২০ আগস্ট) ভেনিসের মার্কো পোলো বিমানবন্দর থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিলানে বাংলাদেশের কনস্যুলেট কর্মকর্তা রফিকুল আলম। তিনি বলেন, “প্রত্যেক বাংলাদেশিকে ইতালির আইন-কানুন মেনে চলতে হবে। অপরাধ থেকে দূরে থেকে সুনামের সঙ্গে বসবাস করাই প্রবাসীদের দায়িত্ব।”

ইতালিতে কট্টর ডানপন্থি রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত আন্না মারিয়া চিসিন্ট লিগা পার্টির সদস্য। মেয়র থাকাকালে তিনি মনফালকোন শহরে একাধিক মসজিদ বন্ধ করে দেন, আজান নিষিদ্ধ করেন এবং সরকারি কার্যালয়ে বোরকা পরা বন্ধ করেন। এসব কারণে স্থানীয় মুসলমানদের মধ্যে তার প্রতি ক্ষোভ রয়েছে।

আইয়ুবের বহিষ্কার নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে চিসিন্ট বলেন, “ইতালিতে একজন বিপজ্জনক চরমপন্থি কমলো। এটাই সেই ইতালি, যা আমরা চাই। আমি গরিজিয়া ও ভেনিসের পুলিশ প্রধান, গরিজিয়ার গভর্নর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং যারা আমাকে সমর্থন করেছেন, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”

তবে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাংসদ ডেবোরা সেরাচ্চিয়ানি এ বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি চাই অপরাধের তদন্ত হোক এবং প্রমাণিত হলে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু তাকে এভাবে বিমানে চড়ে চলে যেতে দেওয়া কেন? ইতালিতে অপরাধ করলে, ইতালিতেই বিচার ও শাস্তি হওয়া উচিত। এই বহিষ্কার প্রক্রিয়া নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য আসছে, যা সন্দেহ তৈরি করছে।”

স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকেই মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী জানান, আইয়ুব খান দীর্ঘদিন মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি প্রায়ই মদ্যপান করে রাস্তায় হট্টগোল করতেন এবং অকারণে মানুষকে গালাগালি দিতেন।

মনফালকোনের সিটি কাউন্সিলর প্রবাসী বাংলাদেশি সানি ভূইয়া বলেন, “আমরা চাই ভবিষ্যতে যেন এমন পরিস্থিতি আর না হয়। এজন্য সবারই উচিত স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলা।”