• ২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসে নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সিএসডব্লিউসি’র ৩ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ১৩:১৭ অপরাহ্ণ
নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসে নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সিএসডব্লিউসি’র ৩ দাবি
সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসকে সামনে রেখে যে কোন যোগাযোগ মাধ্যমে নারী-শিশু সহ যেকোন ব্যক্তির হয়নারীমূলক তথ্য ও ভিডিও অপসারণ, প্রযুক্তি-উদ্ভুত যৌন ভিত্তিক সহিংসতা (Technology-facilitated gender-based-violence) অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ও কার্যকর আইনী ব্যবস্থা নেয়া এবং ব্যক্তিগত তথ্য -সুরক্ষার পরিকাঠামো তৈরীর জন্য জোর দাবী জানিয়েছে নারী ও শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্ম ((Cyber Support for Women and Children-CSWC))।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) উদ্যোগে ১৩টি সংগঠনের অংশগ্রহণে গঠিত এই যৌথ প্লাটফর্ম থেকে মঙ্গলবার এই দাবি জানানো হয়েছে। দাবি উত্থাপনের পাশাপাশি এসব নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনাও করা হচ্ছে।

নারী ও ‍শিশুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরী হতে থাকা বিভিন্ন আপত্তিকর এবং বিকৃত কন্টেন্ট সাইবার হয়রানির (Harassment) হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এ ধরনের ঘটনাগুলো বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্ স্বাধীনতা) ও ৪৩ (গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ) অনুচ্ছেদের সাথে সম্পূর্ণরূপে সাংঘর্ষিক। একইসাথে এটি সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৬ (অনুমতি ব্যতীত পরিচিত তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ইত্যাদির দন্ড) এবং দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ৫০৩ (অপরাধমূলক ভীতিপ্রদর্শন) অধীনে শাস্তি যোগ্য অপরাধ এবং আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদ ও আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদেরও  পরিপন্থী।

প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), যুগ্ম আহ্বায়ক সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়্যারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) এবং সদস্য সচিব নারীপক্ষ। এছাড়া আরও ১০টি সদস্য সংগঠনের মধ্যে আছে-অরোধ্য ফাউন্ডেশন, আর্টিকেল নাইনটিন, ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড ডেভলাপম্যান্ট (আই.আই.ডি), দ্যা টেক অ্যাকাডেমি, ব্র্যাক, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, সাইবার টিনস, ডিজিটালি রাইট লিমিটেড ও হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)।

প্ল্যাটফর্মটির পক্ষ থেকে নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে “সাইবার সুরক্ষায় সচেতনতা গড়ি, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি” স্লোগানে সবাইকে শরিক হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্লাটফর্মটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এখনো কোনো ব্যক্তিগত তথ্য-সুরক্ষার পরিকাঠামো না থাকার কারণে, সাইবার হয়রানির মতো অপরাধে দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ১১ বছরের একটি শিশুকে অপহরণ এবং মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তাকে উদ্ধারের পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন ধরনের নিয়ম না মেনে  ভিডিও ও তথ্য প্রচার করা হয়। যা সাইবার বুলিং  এর সামিল এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লংঘন।

প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী ২০০টিরও বেশী দেশ একসঙ্গে উদযাপন করে নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস। এবার এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো— ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট সব অংশীদাররা এক হয়ে ইন্টারনেটের এই বিশাল জগতকে নিরাপদ এবং কার্যকরী করে তোলা, বিশেষ করে শিশু এবং যুবকদের জন্য। এবছর ২২ তম নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস এর মূল প্রতিপ্রাদ্য বিষয় হলো— সবার জন্য ভালো ইন্টারনেট। দিবসটির মাধ্যমে সাইবার বুলিং, ডিজিটাল পরিচয় এবং অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সংক্রান্ত বিভিন্ন সমসাময়িক সমস্যার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা।