• ২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নৈতিক শিক্ষাঃ সুস্থ জাতি গঠনে অতি গুরুত্বপূর্ণ: -ড.কাজী মো: মনিরুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত মার্চ ৭, ২০২৫, ২২:৪৬ অপরাহ্ণ
নৈতিক শিক্ষাঃ সুস্থ জাতি গঠনে অতি গুরুত্বপূর্ণ: -ড.কাজী মো: মনিরুজ্জামান
সংবাদটি শেয়ার করুন....

সেকাল একাল বিচার বিশ্লেষণ করলে জনে জনে বলেন- এখন আর আগের মত মায়া, মমতা, স্বাদ, নি:স্বার্থ সাহায্য সহযোগিতা, উপকার নাই। ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট, দখলবাজি, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস খুবই অস্বাভাবিক। এছাড়া অসামাজিকতা, বড়দের শ্রদ্ধা সন্মান, ছোটদের স্নেহ ও ভালবাসা ও মানবিকতা উঠে গেছে বা নাই বললেই চলে!
অস্থির অবৈধ অর্থ সম্পদ গড়ার প্রতিযোগিতা!
সরকারী চাকুরীজীবি ঘুষ খাচ্ছে চোখের সামনে প্রকাশ্যে, কেউ কিছুটা গোপনে। আবার মন্ত্রী বলেন- ঘুষ বলবেন না, এটা স্পিড মানি। আবার অনেকে যুক্তি দেখান যে টাকা বেতন পায় সেই টাকায় চলতে পারে? তাই ঘুষ খাচ্ছে। কি আজব যুক্তি! কি অস্বাভাবিক অনৈতিকতা! যেভাবে আয় সেভাবেই জীবন যাপন করার কথা, সেটাই করা উচিৎ।

আমাদের কাছে মনে হয় পুলিশ, বিভিন্ন অফিসের কর্মরতরা ঘুষ খায়, দুর্নীতি করে। আসলে শুধু তাই কি? এরা অবশ্যই অপরাধী নীতিহীন কাজ করছে, কোন ভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।
তবে ১জন ডাক্তার রুগী পেলেই বহুবিধ টেষ্ট, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ দিচ্ছে ও প্রাপ্যের চেয়ে বেশী ফি নিচ্ছে। এমনকি অপারেশন লাগে না, ভয় দেখিয়ে অপারেশন করছে। এটা কি ঘুষ না?
১জন শিক্ষক ক্লাশে পড়াবার কথা, কম বোঝা শিক্ষার্থীকে বেশী কেয়ার নিয়ে পড়ানো। কিন্তু তা না করে যখন প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে, এটা কি ঘুষ নয়?
১জন সাংবাদিক সত্য ও সঠিক তথ্য তুলে ধরবে, সেই রিপোর্টকে ভিত্তি করে অনেকে ন্যায় বিচার পাবে। কেউ অন্যায় করতে সাহস পাবে না। কিন্তু তিনি প্রমান পেয়ে তথ্য পেয়ে সত্য তুলে ধরছে না, কিছু সুবিদা নিয়ে, এটা কি ঘুষ না?
১জন আইনজীবী মক্কেলকে যা বলে তা কি ঠিক রাখে? যত খরচ হবে বলে তার চেয়ে ১০ গুন খরচ নিচ্ছে, কাজ হচ্ছে না। এটাও কি প্রতারনা না বা ঘুষ না?
১জন ব্যবসায়ী ১০টাকার পন্য মজুদ করে ১৫ টাকায় বিক্রি করে। এটা কি জুলুম বা ঘুষ না?
আরও অবাক করার বিষয় মা -বাবা আজ সন্তানকে বাজার করতে দিলে বা পরিবারের কোন কাযে পাঠালে সেখান থেকে সন্তান কিছু অর্থ আত্বসাত করছে।

অনেক রাজনীতিবিদ এখন পলিটিক্যাল বিজনেস করেন। যেকোন মুল্য নিজে ১টি পদ বা ১জন প্রতিনিধি হয়ে শুরু করেন তদবীর বানিজ্য। জনগন ন্যায় সংগত কাজ নিয়ে গেলেও তা না করে বিভিন্ন বাহানা করে টাকা নেয়। কমিটি দিতে টাকা নেয়, শালিস করে টাকা নেয়। এমনকি দুই পক্ষ থেকে টাকা নিয়ে যে পক্ষ বেশী দিলো সেই পক্ষে রায় দেয়। যার কথা ছিল নিরাপেক্ষ ভুমিকা পালন করবেন। জন কল্যানে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করবেন। সেখানে যদি পক্ষ নিয়ে অর্থ নিয়ে দুর্নীতি করে এটা কি ঘুষ নয়?

অন্যদিকে কিশোর, তরুন, যুবক কেমন যেনো হয়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন ডিভাইস ব্যবহার করছে, যা গ্রহন করার কথা তা গ্রহন না করে যেটা এড়িয়ে চলা উচিত সেটাই লুপে নিচ্ছে!
কিশোর গ্যাং নামে খুন খারাপি করছে!
প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে কোমলমতি সন্তানেরা আজ রাত জেগে নেশার মত মোবাইল ব্যবহার করছে। যা বা যতটুকু প্রয়োজন তা বা ততটুকু না করে নিজের জন্য ক্ষতিকর সেটাই দেখছে ও করছে। রাত ২/৩ টা পর্যন্ত জেগে মোবাইল ব্যবহার ব্রেইন ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই হুমকি স্বরুপ।
অধিকাংশ গবেষনায় প্রমানিত- রাত ১০টার মধ্যে ঘুম ও রাত ৮/৯টার মধ্যে খাবার গ্রহন সুস্থ শরীর, স্বাস্থ্য ও মনের জন্য অবশ্যক। নতুবা আস্তে আস্তে কর্ম ক্ষমতা ও স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলবে।
এছাড়া আগেই অনেক পরিবারের সন্তানেরা মাদক সেবায় নিমজ্জিত হয়ে গেছে। নেশাগ্রস্ত হয়ে কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজের অমানবিক অসামাজিক কাজ করে যাচ্ছে। ক্রিয়েটিভ কিছুই না করে ধবংসের দিকে ছুটে বেড়াচ্ছে।
সামাজিক মানবিক মূল্যবোধ নৈতিক অবক্ষয় থেকে রাস্ট্র সমাজ পরিবার ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনতে সকলকে নীতি নৈতিকতা মূল্যবোধ সততা মানবিকতা কমিটমেন্ট রক্ষাকারী আমানত রক্ষাকারী মুসলমান হলে ঈমানদার অন্য ধর্মের হলে ধার্মিক হিসাবে তৈরি হতে হবে। কোন ধর্মেই খারাপের স্থান নাই। নিজেকে আদর্শবান হতে হবে, সন্তানদের প্রতি নিবিড় ভাবে সতর্ক, যত্নশীল হতে হবে। ক্রিয়েটিভ বিষয় গুলির উপর আগ্রহ সৃষ্টি করাতে হবে।
মানব কল্যানে কাজ করা, দেশপ্রেমিক হওয়া, অন্যায়- অবিচার, ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সুস্থ জাতি ও নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রতিজ্ঞা, অংগিকার ও শপথ করি।
নৈতিকতার সততার কাজটি আমার ও আমার পরিবার থেকে শুরু করি, তাহলে অতি দ্রুত একটি সুস্থ জাতি ও কল্যানমুখী কাংখিত বাংলাদেশ গঠন হবে ইনশাআল্লাহ।