বরিশালের চরকাউয়া নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির কারাভ্যন্তরে থাকা সভাপতিকে আইন অমান্য করে অপসারণের অভিযোগে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বরিশালের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) আইনজীবীর মাধ্যমে মামলাটি করেছেন ভূক্তভোগী সাখাওয়াত হোসেন মনির। এ ঘটনায় আদালতের বিচারক হাসিবুল হাসান আসামিদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী আজাদ রহমান। তবে আইন মেনে নতুন তাকে অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।
এ মামলায় বোর্ড চেয়ারম্যানসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ইউএনও, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার উপ পরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বিদ্যালয় পরিদর্শকসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ মার্চ বরিশাল সদর উপজেলার এই স্কুলের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি হন বরিশাল সদর উপজেলা বাস্তুহারা দলের ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন মনির। এরপর ১৬ এপ্রিল নগরীর নতুন বাজার থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বরিশাল বিএনপির অফিস পোড়া মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ২৩ এপ্রিল মনিরকে বাদ দিয়ে পূর্ণিমা সরদারকে সভাপতি করে শিক্ষা বোর্ড।
মামলায় উল্লেখ করা তথ্যানুযায়ী, গত ১৮ মার্চ শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ চরকাউয়া নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে অনুমোদন দেন মনিরকে। তবে স্থানীয় একটি প্রতিপক্ষ মনিরকে আওয়ামী লীগ কর্মী বলে অপপ্রচার চালায়। এরপর কোতোয়ালি থানা পুলিশ বিএনপির অফিস পোড়ানো মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মনিরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
মনিরের স্ত্রী দিবা সিকদার বলেন, ২৩ এপ্রিল ফেসবুকে দেখি তাকে সরিয়ে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাখাওয়াত হোসেন মনিরতো বিদ্যালয়ের সভাপতি, তাকে বাদ দিতে হলেতো নোটিশ বা উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে। কিন্তু কোনো ধরনের নোটিশ এবং যৌক্তিক কারণ ছাড়াই তাকে বাদ দিয়ে দেখি নতুন সভাপতি অনুমোদন করেছে।
তিনি বলেন, আমরা পুরোপুরি চক্রান্তের শিকার। আমার স্বামী বিএনপির আদর্শের মানুষ। তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় কারাভোগ করেছেন। এখন সভাপতি পদ বাগাতে তাকে আওয়ামী লীগ সাজিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে তিনি অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন, ‘বিদ্যালয়ের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন মনির একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকায় আমি বিষয়টি বোর্ডকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি। বোর্ড তার স্থানে পূর্ণিমা সরদারকে নতুনভাবে মনোনীত করে সভাপতি করেছে। সভাপতি বদলের বিষয়ে আমি সম্পৃক্ত নই। এসবের সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার বোর্ডের’।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার (সাখাওয়াত হোসেন মনির) গ্রেপ্তারের সকল কাগজপত্র নিয়ে এসেছিলেন। সঙ্গে অন্যান্য শিক্ষকরাও ছিল। অ্যাডহক কমিটি হয় ৬ মাসের জন্য। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি কবে নাগাদ মুক্তি পান তার নিশ্চয়তা নেই। এমতাবস্থায় বিদ্যালয় পরিচালনার স্বার্থে পরবর্তী মনোনীতকে সভাপতি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সভাপতি বদলে কাউকে নোটিশ বা জানানোর কোনো বিধান নেই।