• ২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে, রক্ষা পাবেন কীভাবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত মে ১৫, ২০২৫, ১৭:৫১ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে, রক্ষা পাবেন কীভাবে?
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বাংলাদেশে হঠাৎ করেই আবহাওয়ার অস্থিরতা জনস্বাস্থ্যের জন্য নতুন বিপদের কারণ হয়ে উঠেছে। দুই দিন প্রচণ্ড গরম, তারপর একদিন ঠান্ডা হাওয়া—এই অনিয়মিত আবহাওয়া বদলের ফলে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, সর্দি ও ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন শিশুরা, বয়স্করা এবং আগেই শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জি থাকা ব্যক্তিরা।

🌡️ হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন: কেন বাড়ছে জ্বর?

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন এক ধরনের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়, তখন হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনে তা ব্যাহত হয়।
এই সময়ে গরমে ঘামার পর ঠান্ডা হাওয়া খাওয়া, ভেজা জামাকাপড়ে বসে থাকা কিংবা ঘর থেকে বের হয়ে ঠান্ডা বাতাসে চলাফেরা করলেই সর্দি-কাশি কিংবা ভাইরাল জ্বরের ঝুঁকি বাড়ে।

📊 স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান বলছে কী?

সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে জ্বর, ঠান্ডা ও ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় রোগ নিয়ে রোগীর সংখ্যা গত দুই সপ্তাহে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ করে শিশু বিভাগে প্রতিদিনই শতাধিক জ্বরাক্রান্ত শিশু ভর্তি হচ্ছে।

🛡️ নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার উপায়:

আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক পরুন: সকাল গরম হলেও বিকেলে বা রাতে ঠান্ডা হতে পারে। তাই হালকা কিন্তু লম্বা হাতার জামা, মাথায় কাপড়/টুপি ব্যবহার করুন।

ঘেমে গিয়ে এসিতে বা ফ্যানের সামনে বসবেন না। এতে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।

প্রতিদিন প্রচুর পানি ও তরল খাবার খান। শরীর হাইড্রেটেড রাখলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

ঘরে ঢুকে হাত-মুখ ধুয়ে পরিষ্কার থাকুন। ভাইরাস অনেক সময় হাতে লেগে আসে, যা থেকে জ্বর বা ইনফেকশন হতে পারে।

জ্বর দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রাম নিন। তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়ালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বাড়িতে শিশু ও বয়স্কদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন। নিয়মিত শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করুন।

🧑‍⚕️ চিকিৎসকের পরামর্শ:

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. শারমিন হোসেন বলেন,
“এই সময়টাতে ভাইরাল জ্বর, ফ্লু এবং অ্যালার্জিজনিত সমস্যার প্রকোপ বেশি থাকে। যেহেতু করোনার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে, তাই জ্বর হলে আলাদা হয়ে বিশ্রাম নেওয়া ও মাস্ক পরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ।”

📢 স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা:

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আবহাওয়ার এই অস্থিরতায় সবাইকে আরও সচেতন ও সাবধান হতে হবে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুদের স্বাস্থ্যবিধি শেখানো এবং স্কুলে যথাযথ স্যানিটেশন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

🗣️ জনসচেতনতা জরুরি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন মেডিকেল ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, জ্বরজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। এক্ষেত্রে শুধু ব্যক্তিগত সতর্কতাই নয়, পরিবার ও কর্মস্থলে সকলের সচেতনতা জরুরি।