দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে একের পর এক শুল্ক আরোপ করে অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই আগ্রাসী শুল্কনীতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে বলে সতর্ক করেছে অর্থনীতি পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)।
সংস্থাটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২.৯ শতাংশে নেমে আসবে, যা পূর্বাভাসের চেয়ে কম। আগের পূর্বাভাস ছিল ৩.১ শতাংশ। এই হ্রাসের অন্যতম কারণ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতিকে দায়ী করা হয়েছে, বিশেষ করে যেভাবে তিনি বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিবেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
ওইসিডির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালভারো পেরেইরা বলেন, “শুল্ক আরোপ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর চাপ বৃদ্ধি করায় আমরা বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছি। এটি কর্মসংস্থানের সুযোগও হ্রাস করবে।”
বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব প্রবৃদ্ধিও হুমকির মুখে রয়েছে। সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১.৬ শতাংশে নেমে আসবে, যেখানে আগের পূর্বাভাসে ছিল ২.২ শতাংশ। এমনকি ২০২৬ সালেও এই ধীরগতির প্রভাব অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিরও সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার ওইসিডির প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে দাবি করেন, “শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে অগ্রগতি হচ্ছে।” তবে সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ০.২ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে, যা ২০২২ সালের পর প্রথমবারের মতো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ককেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদী নীতির ফলে শুধু বিশ্ব অর্থনীতি নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র নিজেই চাপে পড়তে শুরু করেছে।