• ২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খামেনির অনুপস্থিতি ঘিরে উদ্বেগ, ইরানে জল্পনার ঝড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত জুন ২৬, ২০২৫, ১৩:২৩ অপরাহ্ণ
খামেনির অনুপস্থিতি ঘিরে উদ্বেগ, ইরানে জল্পনার ঝড়
সংবাদটি শেয়ার করুন....

যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইরানে দেখা দিয়েছে নতুন এক উদ্বেগ। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এক সপ্তাহেরও বেশি সময় জনসম্মুখে অনুপস্থিত, যা ইরানিদের মধ্যে আশঙ্কা ও নানা জল্পনার জন্ম দিয়েছে।

সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে। দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা নিশ্চিত করলেও দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে এখন একটিই প্রশ্ন—খামেনি কোথায়?

জনসমক্ষে নেই, নেই কোনো বার্তা

নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, যুদ্ধ চলাকালীন এমনকি যুদ্ধবিরতির পরও খামেনির কোনো বক্তব্য বা জনসমাগমে উপস্থিতি দেখা যায়নি। পরিস্থিতি এমন যে, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের একজন উপস্থাপক খামেনির কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে সরাসরি প্রশ্ন করেন—“মানুষ খুব উদ্বিগ্ন, আমাদের সর্বোচ্চ নেতা কেমন আছেন?”

জবাবে খামেনির আর্কাইভস অফিসের প্রধান মেহদি ফাযায়েলি কোনো সরাসরি তথ্য না দিয়ে বলেন, “সবাই প্রার্থনা করুন। যাঁরা তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন, তাঁরা সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইনশাআল্লাহ, আমরা আমাদের নেতার পাশেই বিজয় উদযাপন করব।”

সুরক্ষিত বাঙ্কারে অবস্থান করছেন?

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, খামেনিকে একটি বিশেষ সুরক্ষিত বাঙ্কারে রাখা হয়েছে, যেখানে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক যোগাযোগ করা হচ্ছে না, সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায়। যদিও তাঁর এই ‘অদৃশ্য’ হয়ে যাওয়া জনগণের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

দৈনিক খানেমান পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মোহসেন খালিফেহ বলেন, “এই দীর্ঘ নীরবতা আমাদের ভেতরে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যদি সত্যিই খামেনি মারা যান, তবে সেটি ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় জানাজা হবে।”

গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তেও অনুপস্থিত?

খামেনি শুধু ধর্মীয় নেতা নন, তিনি ইরানের সর্বাধিনায়কও। তাই যেকোনো বড় সামরিক সিদ্ধান্ত—যেমন মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা অথবা যুদ্ধবিরতির অনুমোদন—তাঁর অনুমতিক্রমেই হয়।

এদিকে ইরানি সামরিক ও রাজনৈতিক নেতারা এখনো খামেনির সঙ্গে সাম্প্রতিক কোনো সাক্ষাৎ বা আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারছেন না। বিষয়টি আরও রহস্যময় করে তুলেছে তাঁর অনুপস্থিতিকে।

সম্ভাব্য হত্যাচেষ্টার আশঙ্কা

আইআরজিসি (ইসলামিক রেভ্যলুশনারি গার্ড কোর) কমান্ডার ইয়াহিয়া সাফাভির পুত্র হামজেহ সাফাভি বলেন, “আমাদের গোয়েন্দা সূত্রগুলো মনে করছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েল খামেনিকে হত্যার চেষ্টা করতে পারে। সে কারণে তাঁকে বিশ্ব থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে।”

এই রহস্যজনক নীরবতা ও জনসমক্ষে অনুপস্থিতি ইরানে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়াতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।