• ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইন্টারনেট সংকটে রাবির আবাসিক হলগুলো: ধীরগতিতে নাজেহাল শিক্ষার্থীরা

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত নভেম্বর ২২, ২০২৫, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ
ইন্টারনেট সংকটে রাবির আবাসিক হলগুলো: ধীরগতিতে নাজেহাল শিক্ষার্থীরা
সংবাদটি শেয়ার করুন....

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলগুলোর ইন্টারনেট সেবা নাজুক অবস্থায় পড়ে গেছে। ধীরগতি ও দুর্বল সংযোগে শিক্ষার্থীরা নানামুখী ভোগান্তিতে পড়ছেন। প্রতিটি হলে ওয়াইফাই সেবা থাকলেও পুরনো ডিভাইস, নষ্ট এক্সেস পয়েন্ট এবং রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতির কারণে স্পিড এত কম যে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় কাজই করতে পারছেন না।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে ওয়াইফাই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই চলমান। বারবার অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে তারা বাধ্য হয়ে নিজের টাকা খরচ করে ডাটা কিনে অনলাইন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট বা গবেষণা-সংক্রান্ত কাজ করছেন। অথচ হলে থেকেই প্রতি বছর ইন্টারনেট বাবদ নির্দিষ্ট ফি দিতে হয় তাদের।

বিজয়-২৪ হলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, হলে ওয়াইফাই এত স্লো যে একটি পিডিএফ ডাউনলোড করতেই অনেক সময় লাগে। অনলাইনে কিছু সার্চ করতে গেলেই বাফারিং শুরু হয়। অনলাইন ক্লাসেও ঠিক মতো অংশ নিতে পারি না। অথচ ইন্টারনেট বাবদ ফি দিতে হয় প্রতি বছরই।

জুলাই ৩৬ হলের শিক্ষার্থী রিমা ইয়াসমিন বলেন, ওয়াইফাইয়ের অবস্থা একেবারে নাজেহাল। অনলাইনে ক্লাস করতে গেলেই সমস্যা। প্রতিদিন বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে এমবি কিনে ক্লাস করতে হচ্ছে, যা একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুব কষ্টকর।

মাদার বক্স হলের শিক্ষার্থী বদরুল ইসলাম জামিল বলেন,হলে ওয়াইফাইয়ের অবস্থা ভয়াবহ। কোনো কাজ ঠিকভাবে করা যায় না। আশা করি রাকসুর উদ্যোগে দ্রুত সমাধান আসবে।

সৈয়দ আমীর আলী হলের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব বলেন,ওয়াইফাই সমস্যা বহুদিনের। মনে করেছিলাম প্রভোস্ট স্যাররা দেখবেন। পরে রাকসুর নির্বাচনেও ভেবেছিলাম নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন। কিন্তু এখনো দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।

এবিষয়ে রাকসুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ তোফা বলেন, ১৭টি হলে ওয়াইফাই সুবিধা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে পুরোনো সেটআপই চলছে। অধিকাংশ ডিভাইস পুরনো, অনেকগুলো নষ্ট। একটি হলে যে পরিমাণ এক্সেস পয়েন্ট থাকার কথা, তার ৫ ভাগের ৪ ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে মাত্র ১ ভাগ দিয়ে পুরো হল চলছে।

তিনি আরও বলেন, আইসিটি সেন্টারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি—হলভিত্তিক ডিভাইস পরিবর্তন ও নতুন ডিজাইন স্থাপনের যে বাৎসরিক পরিকল্পনা ছিল তা করা হয়নি। ব্যক্তিগত রাউটার ব্যবহারকারীরাই কিছুটা স্পিড পাচ্ছেন, আর অন্যরা পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, স্টারলিংক খুব ব্যয়বহুল। তহবিল সীমিত বলে সব হলে স্থাপন সম্ভব নয়। ১৭টি হলে নতুন এক্সেস পয়েন্ট, মেইনটেইনেন্স ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগসহ পুরো ওয়াইফাই সিস্টেম হালনাগাদ করতে প্রায় ৪ কোটি টাকা লাগবে বলে জানানো হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে একটি স্টারলিংক স্থাপনের চেষ্টা করছি।

তবে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ড. শারমিন হামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, আমি পরীক্ষা হলে আছি, ১০ মিনিট পরে কল দিন। পরে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।