দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়ে চলা এক সাহসী রাজপথের যোদ্ধার নাম আব্বাস আলী। জয়পুরহাট-২ (কালাই-ক্ষেতলাল-আক্কেলপুর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তিনি এখন ভোটারদের মুখে মুখে আলোচনার শীর্ষে।
ধান-আলুর জন্য বিখ্যাত বৃহত্তর জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল থানার মাটির ঘ্রাণে বেড়ে ওঠা আব্বাস আলী কোনো রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেননি। কৃষিজীবী পরিবার থেকে উঠে এসে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পাড়ি দেন শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ধাপ। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ছাত্রজীবন থেকেই যুক্ত হন জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক অন্যতম সদস্য আব্বাস আলী বর্তমানে উত্তরাঞ্চল জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজপথে বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েও তিনি রাজনীতি থেকে একচুলও সরে দাঁড়াননি।
২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলে ছাত্রদল করার অপরাধে তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালায় সরকার সমর্থিত বাহিনী। জীবিত অবস্থায় মৃত ভেবে ফুলার রোডে ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে যায় তারা। ২০১৩ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশ পালন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের ‘ডিস্কো বাহিনী’র হাতে নির্মমভাবে নিগৃহীত হয়ে দীর্ঘদিন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্ব সময়ে বিএনপির দুঃসময়ে পল্টন কার্যালয়ের সামনে তার দৃঢ় অবস্থান ছিল নজরকাড়া।
সেই বছরেরই আরেক ঘটনা— তাকে গুম করা হয় এবং নিখোঁজ থাকার পর ২১ দিন পর খোঁজ মেলে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ মাস কারাবরণ করেন তিনি। ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই গাবতলীতে বিএনপির ‘ঢাকা ঘেরাও’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে আবারও আওয়ামী সমর্থিত সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন, মাথায় পড়ে ২২টি সেলাই।
ইতিহাসের সবচাইতে কলংক জনক অধ্যায় ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাকাণ্ডে তাকেই লক্ষ্য করে হত্যা চেষ্টা চালানো হয় কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে!!দীর্ঘদিন তারেক রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়েই যখন কালাই ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর বিএনপির মিছিল মিটিংয় করার মত কোন নেতা কর্মীদের খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না ঠিক সেই সময়ে গ্রেফতারকৃত নেতা কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা ক্রমে আর্থিক সহযোগিতা ও কারাগার থেকে মুক্ত করার আশ্বস্ত করেন আব্বাস আলী। কারাবন্দি নেতাকর্মীদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, আর্থিক সহযোগিতা, আইনি সহায়তা এবং সংগঠনের চ্যালেঞ্জিং সময়ে মাঠে নামার সাহসিকতা—সব মিলিয়ে আজ তিনি জয়পুরহাটের রাজনীতিতে এক অবিচ্ছেদ্য নাম।
চারবার গুলিবিদ্ধ হওয়া, ১৪টি রাজনৈতিক মামলায় অভিযুক্ত হয়েও জনসেবার ব্রত থেকে একচুলও সরেননি আব্বাস আলী। জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন পর্যায়ে বিএনপির অন্তত ২০০ নেতাকর্মীর জামিনের ক্ষেত্রে হাইকোর্টে তার সক্রিয় ভূমিকা এখন দলের ভেতরেও প্রশংসিত।
আজকের তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারদের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে তার নাম। মাঠে-ময়দানে সক্রিয় উপস্থিতি, সাধারণ মানুষের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক এবং দুঃসময়ে পাশে থাকার কারণে তিনি হয়ে উঠেছেন গণমানুষের আস্থার প্রতীক।
আব্বাস আলী বলেন, “জয়পুরহাট-২ আসনে যদি বিএনপি আমাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রদান করে, তাহলে অতীতের মতোই দেশ, জনগণ ও দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছি। ইনশাআল্লাহ, সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করবো।”
তিনি আর শুধুমাত্র একজন রাজনীতিক নন—তিনি এখন একটি আন্দোলনের প্রতীক, একজন আদর্শিক যোদ্ধা, জিয়া পরিবারের আদর্শিক উত্তরসূরি এবং গণমানুষের পক্ষের সাহসী কণ্ঠস্বর।