• ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই ঘোষণাপত্র না এলে আমরা বসে থাকবো না: এনসপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত জুন ৩০, ২০২৫, ১৯:৪৬ অপরাহ্ণ
জুলাই ঘোষণাপত্র না এলে আমরা বসে থাকবো না: এনসপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম
সংবাদটি শেয়ার করুন....

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দুইবার সময় দিলেও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশে প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। সরকার এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ না নিলে ছাত্র ও জনতা চুপচাপ বসে থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (৩০ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে কী বলেছেন নাহিদ?

নাহিদ ইসলাম জানান, জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, শহীদদের ত্যাগ, আহত ও নেতৃত্বদানকারী তরুণদের অবদান এবং রাজনৈতিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার একটি জাতীয় দলিল। যা ভবিষ্যতে আইন ও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার মতো ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।

তিনি বলেন, “৩১ ডিসেম্বর ছাত্রনেতারা নিজেরা ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিল, কিন্তু সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তা রাষ্ট্রীয়ভাবে দিতে চেয়েছিল। সেই কারণে ছাত্রনেতারা তাদের স্বতন্ত্র উদ্যোগ থেকে সরে আসে।”

পরে সরকার পক্ষ থেকে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কাছে খসড়া ঘোষণাপত্র চাওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি খসড়া জমা দেয়। সেগুলো মিলিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ দলিল প্রকাশের কথা ছিল।

কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা বাস্তবায়ন করেনি। কোথায় বাধা, কী কারণে দেরি—তাও পরিষ্কার করেনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা চাই, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগেই এই ঘোষণাপত্র জারি হোক এবং তা সংবিধানে যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি থাকুক। তবে সরকার যদি দায়িত্ব না নেয়, তাহলে আমরাও চুপ করে বসে থাকবো না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের ইশতেহার প্রকাশ করবো, অন্য পক্ষগুলোকেও আহ্বান জানাবো তারা যেন নিজেদের দলিল তৈরি করে। আমরা সমন্বিতভাবে একটি জাতীয় দলিল গঠন করতে পারলে, সরকারকে তা গ্রহণ করতে বাধ্য করা সম্ভব হবে।”

তিনি ঘোষণা দেন, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র শহীদ পরিবার থেকেই পাঠ করা হবে।

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে

নাহিদ ইসলাম ব্যাখ্যা করেন, “জুলাই সনদ হবে রাষ্ট্র সংস্কারের রাজনৈতিক নথি। সংবিধানের যেসব জায়গায় পরিবর্তন প্রয়োজন, তা নিয়েই রাজনৈতিক ঐকমতের ভিত্তিতে প্রস্তুত হবে এই সনদ। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যম হতে পারে গণভোট, গণপরিষদ বা সংসদীয় সংশোধনী।”

তার মতে, আগামী নির্বাচিত সরকার এই সনদের ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম চালাতে বাধ্য থাকবে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই-অগাস্টের মধ্যে ঘোষণাপত্র ও সনদ দুটোই প্রকাশ সম্ভব। যদি কোনো দল দলীয় স্বার্থে ঐক্যমত নষ্ট করে, তাহলে সরকারকে উচিত হবে জনগণ ও অন্যান্য পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। না হলে সরকারের জুলাই উদযাপন করারও অধিকার থাকবে না।

তিনি বলেন, “আমরা চাই আগামী ৫ আগস্ট অর্থাৎ ৩৬শে জুলাইয়ের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ প্রকাশিত হোক। সবাইকে ছাড় দিয়ে সরকারকে সহায়তা করতে হবে।”

অবশেষে তিনি জানান, “আগামীকাল থেকে আমাদের ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শুরু হবে। পথে প্রান্তরে সবার সঙ্গে কথা হবে।”