স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর পদ শূন্য হওয়ায় এলজিইডি’র সর্ব স্তরের কর্মকাণ্ডের গতি মন্তর হয়ে পড়েছেন এবং প্রকৌশলীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ এর শেষ কর্মদিবস ছিল গত জানুয়ারির বৃহস্পতিবার। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্থাকে রাষ্ট্র ও জনস্বার্থে সচল রাখার ক্ষেত্রে একজন প্রধান প্রকৌশলী দায়িত্ব রত থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বেশ কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর পদটি এখনো শূন্য রয়েছেন ।এজন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সব ধরনের কর্মকাণ্ডে কিছুটা অচল অবস্থা তৈরি হয়েছেন বলে এলজিইডি সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দাবি করেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটি জন্ম লগ্ন থেকেই প্রধান প্রকৌশলীর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুই একটি ঘটনা ব্যতীত গ্রেডেশন তালিকা লঙ্ঘিত হয়নি। গত পাঁচই আগস্ট এর পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মো:ওয়াহিদুর রহমান ও শ্যামা প্রসাধ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলেও পরবর্তী পর্যায়ে গ্রেডেশন তালিকা অনুসরণ করেই প্রধান প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পেয়েছেন। ৫ আগস্ট প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর এলজিইডি র প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলী আক্তার হোসেন অবসরে গেলেও গ্রেডেশন অনুযায়ী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ প্রধান প্রকৌশলী রুটিন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগ সরকার সমর্থিত হওয়ায় তাকে ভারপ্রাপ্ত ও পরিপূর্ণ প্রধান প্রকৌশলী (গ্রেট -১)দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এতে করেও এলজিইডি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। সর্বশেষ এলজিইডি র প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথের গত বৃহস্পতিবার শেষ কর্ম দিবস হলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে প্রধান প্রকৌশলীর পদে পদায়ন করা হয়নি। এতে করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রশাসনিক কর্মকান্ডের অনেকটা অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে গ্রেডেশন তালিকা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসলে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শেখ মুজাক্কা জাহের প্রধান প্রকৌশলীর পদে দায়িত্ব পাবেন ১০ দিন। এভাবে গ্রেডেশন তালিকা অনুযায়ী দায়িত্ব পেলে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কে এম জুলফিকার আলী ১০ দিন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনামুল হক চার মাস, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশিদ মিয়া দুই মাস ১১ দিন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার হোসেন এক মাস ২৫ দিন ও অতিরিক্ত প্রদান প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ করিম একমাস পাঁচ দিন প্রধান প্রকৌশলীর পদে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের, স্থানীয় সরকার বিভাগে যোগাযোগ করা হলে কর্মকর্তা সূত্র জানান, বিষয়টি নীতি -নির্ধারণী মহলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে। স্বল্প সময়ের দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে । এজন্য নীতি- নির্ধারণী পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় একটি কমিটি মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবেন এবং অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই একজন প্রধান প্রকৌশলীর পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিবেন। এ দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রধান প্রকৌশলীর পদটি খালি থাকায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের মন্থর গতিতে এ দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ হতাশা ব্যক্ত করেছেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বেশিরভাগ প্রকৌশলী গ্রেডেশন তালিকা অনুসরণ করে প্রধান প্রকৌশলী পদে নিয়োগের মতামত ব্যক্ত করেন । তারা মনে করেন, গ্রেডেশন তালিকা লঙ্ঘিত করে কাউকে প্রধান প্রকৌশলীর পদে নিয়োগ প্রদান করলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের শৃঙ্খলায় বিঘ্নিত হবে এবং প্রশাসনিক কর্মকান্ডে সকল প্রকৌশলীদের অনাগ্রহ সৃষ্টি হলে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড বিঘ্নিত সহ নানান ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে ৫ আগস্ট প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর এই অধিদপ্তরে বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তা- কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজমান।কর্মচারীদের আন্দোলন সহ বিভিন্ন কর্মকান্ড এখনো অব্যাহত। এ বিষয়গুলো মন্ত্রণালয়ের বিবেচনার নিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের সিদ্ধান্তে আসা উচিত অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।তবে সবশেষ মন্রনালয়ের নীতি-নিধারণীদের সিদ্ধান্তই সঠিক বলে বিবেচিত হবেন বলে অনেক মনে করেন।