• ৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার অধীনে পরপর ৩টি নির্বাচনেই জাতীয় পার্টি কে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে

মাশরুর মাওলা, কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ.

বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ১৪:০০ অপরাহ্ণ
শেখ হাসিনার অধীনে পরপর ৩টি নির্বাচনেই জাতীয় পার্টি কে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বিশিষ্ট কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ মাশরুর মাওলা বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে পরপর ৩টি নির্বাচনে অংশ নিতে কুটকৌশলে জাতীয় পার্টি কে বাধ্য করা হয়েছে।জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বিশ্বাসী।২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ১৫৭ জন প্রার্থীকে নির্বাচনের মাঠ থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে সি এম এইচ হাসপাতাল আটকে রেখে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করে। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ব্যবহার করে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করে। একজন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি বিশ্বাস করি জাতীয় পার্টি অবাধ,নিরপেক্ষ এবং সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বিশ্বাস করে।বিশিষ্ট কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ মাসরুর মাওলা জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক দর্শন বিশ্লেষণ করে এই প্রতিনিধিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

প্রায় ২০ বছরের কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিত্ব মাশরুর মাওলা এই প্রতিনিধিকে বলেন,একটি বিশেষ স্থিতিশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের মাধ্যমে সামরিক শাসন জারি এবং পরবর্তীতে ১০ বছরের দেশ পরিচালনায় অভিজ্ঞতা, একই সাথে ১৫ বছরের বিরোধী দল হিসাবে সংসদে ভূমিকা রাখার প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন,জাতীয় পার্টিতে দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক অভিজ্ঞ সম্পন্ন ব্যক্তি রয়েছে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মুজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশিদ,, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার মত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা এদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে জাতীয় পার্টি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এগিয়ে যেতে পারে ।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ মাশরুর মাওলা বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ এর নেতৃত্বেই এদেশে গ্রাম পর্যায়ে উন্নয়নের সূচনা হয়েছে।তার ঐতিহাসিক উন্নয়নের দর্শন হচ্ছে ৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাজবে, তার উন্নয়নের দর্শন বাংলাদেশের অর্থনৈতিককে মূলত টেকসই করেছে । তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ তার শাসনামলে দেশের বিচারব্যবস্থাকে গ্রাম পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা করছিলেন।
উপজেলা পর্যায়ে বিচারকই আদালত পৌঁছেছিল তার আমলেই দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনের রূপ দিয়েছিল। সারাদেশে ৬টি হাইকোর্ট বেঞ্চে স্থাপন করেছিল,সারা দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট একটি টেকসই অর্থনৈতিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।গ্রামের প্রতিটি ঘর থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় তিনি একজন নিরলস কর্মী হিসেবে ঘর থেকে ঘরে ছুটে বেরিয়েছেন।আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাকে খুব বেশি মনে পড়ছে। তিনি বলেন ,১৯৯০ সালের সর্বশেষ বাজেটে তখনকার অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ৫.৮ বিলিয়ন বাজেট সম্প্রসারণ করছিলেন,যা ছিল তখনকার সময়ে অর্থনৈতিক মুক্তির অনন্য ভিত্তি। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এর রাজনৈতিক দর্শন বর্ণনা করে বলেন,তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বে একজন অতি জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। প্রথম এ দেশ থেকে জাতিসংঘের সৈন্য প্রেরণের সূচনা হয়। তিনি সার্ককে অর্থবহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।তিনি প্রতিবেশী দেশ আমেরিকা,চীন সহ মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী কূটনৈতিক অবস্থান প্রতিষ্ঠা করে দেশের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন ।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৯টি সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন , সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ তার গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে সব সরকার কার্যক্রম শুরু করেছিল। দেশের ৭টি প্রদেশে রূপান্তরের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিগত সরকার তার বিরুদ্ধে কোন আদালতে দুর্নীতি অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তিনি ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্মের জাতীয় মর্যাদা সহ সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানে শুক্রবারসহ সপ্তাহে ২দিন ছুটি মঞ্জুর করেছিলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে গ্রাম পর্যায়ে তিনি ছিলেন খুব জনপ্রিয়। সংসদ নির্বাচনে তিনি ৫টি আসনে নির্বাচন করে ৫টি আসনেই বিজয় হয়েছিলেন ।এমন যে শুধুমাত্র বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেই দেখা যায়।উন্নয়নের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে তিনি সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে । ঢাকা সহ দেশের বিভাগীয় শহর সর্বপ্রথম তিনি সূচনা করেছিলেন। তার শাসনামলে উন্নয়নের দৃষ্টান্ত বহন করছে ।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ মাশরুর মাওলা বলেন, জাতীয় পার্টি একটি
জন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল। এ দলের রয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনার বিশেষ দক্ষতা, গণতন্ত্রের প্রেক্ষাপটে মানুষের স্বপ্ন পূরণে দেশের কল্যাণে অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা তিনি করছেন। কারণ গণতন্ত্রে প্রতিটি মত ও পদকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়,এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। বিভিন্ন মত পথ থাকবে দিনশেষে অবাক নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হতে পারে।