দ্রুততম সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হেঁটে এভারেস্ট জয় করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশের ইকরামুল হাসান শাকিল। ‘সি টু সামিট’ অভিযানের অংশ হিসেবে তিনি প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে পৌঁছান। সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন।
সোমবার (১৯ মে) বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) সদস্য ও অভিযানের সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা শম্পা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শাকিল ক্যাম্প ৪-এ ফিরেছেন এবং এভারেস্ট জয় করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। ইন্টারনেট ও ফোন যোগাযোগ না থাকায় সঠিক সময় বা ছবিসহ বিস্তারিত এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এভারেস্টে থাকা কোম্পানি অভিযানের সফলতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
শাকিলের এই অভিযান শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, কক্সবাজারের ইনানি সমুদ্র সৈকত থেকে। ৯০ দিনের মধ্যে ‘সি টু সামিট’ লক্ষ্য পূরণ করে তিনি পৌঁছান এভারেস্টের ২৯,০৩১ ফুট উঁচু শৃঙ্গে। যাত্রাপথে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মোট ১,৩০০ কিলোমিটার দুর্গম পথ অতিক্রম করেন।
এর আগে, ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ান পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে হেঁটে ১২শ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ৯৬ দিনে এভারেস্ট জয় করেছিলেন। শাকিল সেই রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছেন, তিনি সময় কম নিয়েছেন এবং পথও বেশি পাড়ি দিয়েছেন।
শাকিলের পর্বতারোহণের অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের। ২০১৩ সালে তিনি কলকাতা থেকে হেঁটে ১১ দিনে ঢাকায় পৌঁছান। এরপর যোগ দেন বিএমটিসিতে এবং প্রাথমিক পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ নেন ভারতে। ২০১৫ সালে তিনি এম এ মুহিতের নেতৃত্বে কেয়াজো-রি (২০,২৯০ ফুট) পর্বত জয় করেন।
এর আগে যাঁরা এভারেস্ট জয় করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—মুসা ইব্রাহিম, নিশাত মজুমদার, এম এ মুহিত, ওয়াসফিয়া নাজরীন, খালেদ হোসেন এবং বাবার আলী।
ইকরামুল হাসান শাকিলের এই অসাধারণ সাফল্য শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব পর্বতারোহণ ইতিহাসেও এক গৌরবজনক অধ্যায় রচনা করলো।