মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সামরিক হামলার মাধ্যমে। শুক্রবার রাতে ইরান সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলের কেন্দ্রস্থলে, যার ফলে প্রাণহানি, ধ্বংস এবং সাধারণ মানুষের মাঝে গভীর আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল তেল আবিব, রামাত গান ও রিশন লে জিয়োন শহরের আবাসিক এলাকা ও স্থাপনা।
ইসরায়েলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট না হয়ে সরাসরি আঘাত হানে। হামলার আগে সতর্ক সংকেত হিসেবে সাইরেন বাজানো হলে মানুষ দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়।
ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত
-
প্রাণহানি: রিশন শহরে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ৭৩ বছর বয়সী ইসরায়েল আলোনি এবং অপরজন একজন নারী।
-
আহত: আহত হয়েছেন অন্তত ৬৩ জন, যাদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
-
শিশু উদ্ধারের ঘটনা: ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় মাত্র তিন মাস বয়সী একটি শিশু, যাকে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা
তেল আবিবের বাসিন্দা টালি হোরেশ বলেন, “বিস্ফোরণের শব্দে পুরো ভবন কেঁপে উঠেছিল। ধোঁয়ায় ভরে যায় ঘর, আমরা সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ কক্ষে আশ্রয় নিই।”
অন্য এক বাসিন্দা অভি গাতেনিও জানান, “সাইরেন শোনামাত্র সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়ে যাই। পরে দেখি পাশের ভবনে এক প্রবীণ দম্পতি ধ্বংসস্তূপে আটকে আছে, তাদের উদ্ধারেও সহযোগিতা করি।”
উদ্ধার তৎপরতা
ইসরায়েলি উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার করে। আগুন, ধ্বংস ও চিৎকারের মধ্যে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যান।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ শঙ্কা
এ হামলার পর গোটা ইসরায়েলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ভূপাতিত করা হয়েছে, তবুও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র গৃহ ও স্থাপনায় আঘাত হানে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের পাল্টা হামলা অঞ্চলটিকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে এবং একটি পূর্ণমাত্রার দ্বিপাক্ষিক সংঘাতের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।