• ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চরিত্র গঠনে ধর্মীয় শিক্ষা, অপরাধ দমনে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ডাক -অধ্যক্ষ আশরাফুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত জুলাই ৫, ২০২৫, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ণ
চরিত্র গঠনে ধর্মীয় শিক্ষা, অপরাধ দমনে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ডাক -অধ্যক্ষ আশরাফুল হক
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা-১৮ আসন থেকে এমপি পদে মনোনীত প্রার্থী এবং দলটির কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগের সদস্য অধ্যক্ষ আশরাফুল হক দৈনিক ভোরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ধর্মীয় শিক্ষা হচ্ছে সুস্থ চরিত্র গঠনের মূল ভিত্তি। সমাজ থেকে মাদক, জুয়া, সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও দুর্নীতির মতো অপকর্ম নির্মূলে একটি শক্তিশালী সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অধ্যক্ষ আশরাফুল হক। তাঁর পিতা মোঃ মোজাহারুল হক একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। শৈশব ও বিদ্যালয় জীবন কেটেছে লালমনিরহাটে। ১৯৭৯ সালে ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৮৬ সালে এলএলবি (অনার্স) ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি চার পুত্র সন্তানের জনক এবং তাঁর স্ত্রী নীলিমা জাহান ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী ও পেশায় একজন শিক্ষক। আইন পেশায় যুক্ত থাকলেও অধ্যক্ষ আশরাফুল হকের প্রকৃত আগ্রহ শিক্ষা প্রশাসন, গবেষণা এবং শিক্ষক সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে। শিক্ষা ছাড়াও তিনি সমাজসেবা ও ইসলামী রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত।

১৯৯৬ সালে তৎকালীন ঢাকা-৫ (বৃহত্তর উত্তরা ও আশপাশের এলাকা) আসন থেকে তিনি জামায়াতের মনোনয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে তিনি উত্তরা দক্ষিণখান গণকবরস্থান রোড ও উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে বসবাস করছেন। এলাকার জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও জনপ্রিয়তার কারণে তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের হয়রানি, হুলিয়া, মিথ্যা মামলা ও কারাবরণসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন।

জনসেবামূলক কাজে ব্যাপক সম্পৃক্ততা থেকে তিনি “আমরা ঢাকা ফাউন্ডেশন” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। ১৯৭১ সালের শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে এবং ২৪ জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর একটি সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত, বৈষম্যহীন ও ইনসাফভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গঠনে তিনি ঢাকা-১৮ (উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগ, বিমানবন্দর ও খিলক্ষেত) থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি এলাকাবাসীর দোয়া, সমর্থন ও সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করেন।

সাক্ষাৎকারে অধ্যক্ষ আশরাফুল হক বলেন, নারীর সম্মান ও ন্যায্য অধিকার রক্ষা করতে হবে এবং অশ্লীলতা, ইভটিজিং ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। তিনি দাবি করেন, মিথ্যা মামলা, হয়রানি ও মামলা বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও তিনি বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্সের হার যৌক্তিক করা, নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ, রোড লাইট সচল রাখা, কাঁচা রাস্তা মেরামত, যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি জানান, যত্রতত্র ময়লা ফেলা ও মশার উৎপাত বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি। দরিদ্র, শ্রমজীবী ও সাধারণ জনগণের মৌলিক অধিকার—অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, যুব সমাজের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও শিল্পভিত্তিক প্রশিক্ষণ চালু করে দেশ-বিদেশে চাকরির সুযোগ বাড়াতে হবে।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিতদের উপযুক্ত বেতন ও সুযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বেকার ভাতার ব্যবস্থা উন্নত করার কথা বলেন তিনি। হকারসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য নিরাপদ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়াও তিনি লোক সমাগমপূর্ণ এলাকায় পাবলিক টয়লেট স্থাপন, প্রতিটি এলাকায় খেলাধুলার মাঠ, শিশু ও মহিলাদের জন্য পার্ক এবং কমিউনিটি হাসপাতাল ও কবরস্থানের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন।