রাজধানীতে ভবন নির্মাণ করতে হলে রাজউকের অনুমোদন গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। অনুমোদন ছাড়া নির্মিত যেকোনো ভবন অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং রাজউক সেইসব ভবনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, রাজউকের জোন-৭/১ এর ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন বছরের পর বছর ধরে দায়িত্বে অবহেলা করে আসছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সত্ত্বেও তিনি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে অবৈধভাবে নির্মিত ভবনের নির্মাণকাজ চলতে দিচ্ছেন।
ভবন নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়েই রাজউকের কাছে অভিযোগ করেন এক প্রতিবেশী। তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে জয়নাল আবেদীন ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ না করে বরং উল্টো ভবন মালিককে নির্মাণে ফুল স্পিডে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ‘ছাড়পত্র’ দেন। একইসঙ্গে অভিযোগকারীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং হুমকি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভিযোগ দায়েরের পর দুই থেকে তিন বছর কেটে গেলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। বরং অভিযোগকারীকে দিনের পর দিন হয়রানি করা হচ্ছে। এতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে অনেকেই অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন কিংবা আর প্রতিকারের আশা করেন না। এ যেন এক চরম দুর্নীতির চিত্র।
রাজউক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। টিআইবি, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন অভিযোগের সত্যতা বহুবার উঠে এসেছে। নকশা অনুমোদন, ছাড়পত্র প্রদান, কিংবা অবৈধ নির্মাণকাজ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ—প্রতিটি স্তরে ঘুষ ছাড়া কিছুই হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। জয়নাল আবেদীন এরকমই একজন কর্মকর্তা, যিনি নকশা অনুমোদন থেকে শুরু করে নির্মাণ পরিদর্শনের প্রতিটি ধাপে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
রাজউক জোন-৭/১ এর অধীন এলাকাবাসীর দাবি, দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও অনিয়ম বাড়বে। তারা সরেজমিনে তদন্তপূর্বক দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।