বাজারে বিক্রি হওয়া জনপ্রিয় সোনালি জাতের মুরগির মাংসে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ‘ই. কোলাই’ শনাক্ত হয়েছে বলে সতর্ক করেছে একটি ভোক্তাসচেতনতা সংগঠন।
‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি (CCS)’ নামের একটি সংগঠনের দাবি অনুযায়ী, তারা বাজার থেকে সংগৃহীত ৩৯০টি সোনালি মুরগির নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে দেখেছেন, এর মধ্যে ৬৮.২১ শতাংশ নমুনায় অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই. কোলাই সাধারণত অন্ত্রে বাস করে এবং বেশিরভাগ সময় নিরীহ থাকলেও কিছু কিছু ধরন মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ই. কোলাই শরীরে প্রবেশ করলে ভবিষ্যতে সাধারণ সংক্রমণের ক্ষেত্রে চিকিৎসা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ অ্যান্টিবায়োটিক তখন কার্যকর না-ও হতে পারে।
স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে খামারে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে এসব ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ছে। এতে করে শুধু ভোক্তাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকিই বাড়ছে না, বরং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধজনিত বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
ভোক্তাদের জন্য সতর্কতা:
-
মুরগির মাংস অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।
-
বাজার থেকে মুরগি কেনার সময় দোকানের পরিচ্ছন্নতা যাচাই করুন।
-
কাঁচা মাংসের সংস্পর্শে আসার পর হাত ধুয়ে নিন এবং রান্নার যন্ত্রপাতি আলাদা রাখুন।
-
অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকুন।
গবেষণার উৎস নিয়ে প্রশ্ন
যদিও সংগঠনটি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির তথ্য দিয়েছে, তবে এই গবেষণাটি কোথায়, কারা পরিচালনা করেছে বা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকার অনুমোদিত পরীক্ষাগার এই ফলাফল দিয়েছে কিনা—তা পরিষ্কারভাবে জানানো হয়নি। ফলে তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সতর্কবার্তা অনুযায়ী, প্রাণিসম্পদে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার বিশ্বব্যাপী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (AMR) বাড়িয়ে তুলছে, যা ভবিষ্যতের জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
