চার দেয়ালের ভেতরে নিথর পড়ে আছেন স্ত্রী। অসুস্থ শরীর, অসহায়ত্বের সাথে করছেন দিনযাপন। অথচ সাবেক বিএডিসি কর্মকর্তা এহসানুল হক মতি (৬৬) দিনের পর দিন অন্য নারীর সঙ্গে লাগামহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয়দের ভাষ্য, এটি তার দীর্ঘদিনের অভ্যাস।
অবসর গ্রহণের পর থেকেই তার বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন প্রতিবেশীরা। পারিবারিক দায়িত্ব ভুলে আজ তিনি অন্য নারীর মোহে বুঁদ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ স্ত্রীকে দেখভালের ন্যূনতম আগ্রহ কিংবা দায়িত্ববোধও তার মধ্যে দেখা যায় না।
জানা গেছে, স্ত্রীকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের বসিরপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি। সেখানে বাড়ির কাজের জন্য রেখা (৪৫) নামে এক মহিলা কাজ করতেন। বাসা ফাঁকা পেলেই রেখার সাথে অপকর্মে লিপ্ত হতেন এমন অভিযোগও পাওয়া যায়। স্বামীর এরকম অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ঢাকায় ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও মানসিক অসুস্থতা থেকেই যায়।
এদিকে সম্প্রতি ওই ফ্ল্যাটে কাজের মহিলা রেখার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরা পড়েন সাবেক বিএডিসি কর্মকর্তা মতি। ধরা পড়ার পর মতির প্ররোচনায় রেখাসহ রেখার ছেলে ও মেয়ে মিলে নিজের অসুস্থ স্ত্রী এবং মেয়েকে মারধর করে। এতে তারা গুরুতর আহত হোন। পরবর্তীতে টাকার প্রভাবে বিষয়টি ম্যানেজ করে পার পেয়ে যান তিনি। এ বিষয়টি নিয়ে রেখাসহ তার দুই ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলে জামিনসহ যাবতীয় বিষয়ে সহযোগিতা করেন সাবেক এ কর্মকর্তা।
স্থানীয়রা জানান, ওই নারী প্রতিদিন তার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। সাবেক এই কর্মকর্তার এমন অনৈতিক কাজ দেখে হতবাক হন প্রতিবেশীরা।
ঘটনার পর এরকম কাজ আর করবেন না বলে মুখে আশ্বস্ত করলেও বর্তমানে আবারো সেই নারীর সঙ্গেই অবাধে চলাফেরা করছেন মতি। শহরের বিভিন্ন হোটেলে তাদের একসঙ্গে খেতে দেখা যায় প্রায়ই।
অন্যদিকে বৃদ্ধ ও অসুস্থ স্ত্রী চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখে অসহায় হয়ে পড়েছেন। দেখাশোনাসহ চিকিৎসার অভাবে বর্তমানে তিনি তার জামাইয়ের বাড়িতে আছেন। জীবনের শেষ সময়ে স্বামীর কাছ থেকে সামান্য ভালোবাসা ও সঙ্গ পাওয়ার আশায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। কিন্তু স্বামী মতির যেন বিন্দুমাত্র ভাবনা নেই, পেছনে পড়ে আছে একটি অসুস্থ স্ত্রী ও ভেঙে পড়া পরিবার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, “এ ধরনের স্বামী ও বাবা সমাজের জন্য লজ্জাজনক। স্ত্রী-সন্তান রেখে অন্য নারীর পেছনে এমন জীবন যাপন একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তার জন্য অশোভন।
এ বিষয়ে এখনো ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে সচেতন মহল বলছেন, পরিবার ও সমাজের স্বার্থে এমন অপকর্ম বন্ধ হওয়া উচিত।
ঠাকুরগাঁও / দৈনিক ভোর